যুগে যুগে যখনই কোন মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছে এই বিশ্বে তখনই তিনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোকের পথ প্রদর্শন করেছেন এবং মানব জাতিকে কুসংস্কার ও অন্যায় পথ থেকে আলোতে এনেছেন।

মহামানবের আবির্ভাবের পূর্বে তাঁর আগমন বার্তা আল্লাহর নির্দেশে, কোন নবী বা ফেরেস্তার মাধ্যমে আল্লাহ্ তাঁর সংবাদ পৌঁছেছেন। কোন অলি হলে স্বপ্নাদেশ বা এলহামের মাধ্যমে সে সংবাদ আমরা লাভ করি। এইভাবে বিশ্বের মানবকুল উপলব্ধি করে কিভাবে মহান শক্তিমান আল্লাহ্ তাঁর এবং তাঁর প্রেরিত হযরতের বার্তা প্রেরণ করেন, আধ্যাত্মিক শক্তি সম্পন্ন মানব জাতির মাধ্যমে। 

ইহুুদী ও খ্রিষ্ট্রানদের পবিত্রগ্রন্থ তাওরাত ও ইঞ্জিল এবং অন্যান্য পবিত্র গ্রন্থ পড়ার পর মানুষ জানতে পারে বিশ্বে ঈশ্বরের পূর্ণবার্তা পৌঁছে দেবার জন্য এক মহামানব হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) যিনি আল্লাহর শেষ এবং শ্রেষ্ঠ দূত রূপে আবির্ভূত হবেন। তাঁর আগমনের পর আল্লাহর আর কোন পয়গম্বর পৃথিবীতে আবির্ভূত হবেন না। 

শেষ পয়গম্বর হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আবির্ভাবের পর তিনি ঘোষণা করেন তাঁর পরলোকগমনের পর বিশ্ব ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত আর কোন পয়গম্বরের আগমন ঘটবে না, কিন্তু মাঝে মাঝে কোনো কোনো পথ নির্দেশক বা সংস্কারকের আবির্ভাব হবে। যিনি “কোরআন এবং হাদিস” অনুযায়ী স্বর্গীয় আলো প্রজ্বলনের পথ প্রদর্শন করার জন্য আবির্ভূত হবেন। মানুষ যখন ভালো কাজ করতে বিস্মৃত হয়েছে এবং মন্দ কাজের প্রতি অনুরক্ত হয়েছে, তখন মানুষের ঐতিহ্য সম্পর্কে শিক্ষাদানের নিমিত্ত বিশ্বে মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছে। 

হযরত শাহ্ সূফী ফতেহ্ আলী ওয়াইসী জন্মের পূর্বে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তাঁর পরম করুণায় বিশ্বের মানুষকে তাঁর আগমনের সংবাদ মহামানবের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিলেন। যখন তিনি তাঁর মাতৃগর্ভে, হযরত খাজা খিজির (আঃ) তাঁর মায়ের সম্মুখে আবির্ভূত হয়ে তাঁকে বলেন, যাঁরা হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর শিষ্য তাঁরা তোমার পুত্রকে গভীরভাবে ভালোবাসবে এবং সে তাদের পরম প্রিয় হবে। সে হবে এক মহান সাধক। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি প্রেমই হল তাঁর শক্তি বা প্রকৃতি। প্রত্যুষে তাঁর পিতা স্বপ্ন দেখলেন এক আলোকিত উজ্জ্বল কণাপুঞ্জ নক্ষত্রলোক চ্যুত হয়ে আশ্রয় নিল তাঁর কপালে। 

এক রাত্রের শেষ প্রার্থনা অর্থাৎ এশার নামাজের পর হযরত গাওসুল আজম ও হযরত মোজাদ্দেদ আলফেসানীর মাধ্যমে পর্দার আড়াল থেকে শ্রবণ করলেন তাঁর কনিন্ঠ পুত্র মোহাম্মদ (সাঃ) এর মহান ভক্ত বা ইশিক হবে। তিনি যখন মধ্যরাত্রির বিশেষ প্রার্থনা তাহাজ্জুদের নামাজ শেষে পবিত্র “কোরআন” পাঠ করছিলেন তখন একদা হযরত গাউসুল আজম, হযরত খাজা আজমেরী চিশ্তি ও হযরত বাহা উদ্দিন নক্শে বন্দি নিকট থেকে শ্রবণ করলেন, তাঁর পুত্র রাসূলের আশেক হবে। হযরত ফতেহ্ আলী ওয়াইসী (রহঃ) বাবার নিকটআত্মীয় হযরত নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী (রহঃ) তাঁর আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে জানলেন, হযরত ওয়ারেস আলীর কনিষ্ঠ পুুত্রের সঙ্গে পয়গম্বর হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) গভীর অন্তহীন প্রেম ও ভালবাসার সম্পর্ক রচিত হবে, সে তাঁর শিষ্য (মুরিদ) হবে। 

একবার হযরত সূফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী (রহঃ) স্বপ্নে প্রত্যক্ষ করলেন সিদ্দিকে আকবর হযরত আবু বকর (রহঃ) ফারুখে খোদা হযরত আলী মোর্ত্তাজা (রহঃ) তাঁকে এরশাদ্ করছেন, ওয়ারেস আলীর কনিষ্ঠ পুত্রের নাম হবে ফতেহ্ আলী। সে ওয়াইসীয়া নেসবত প্রাপ্ত হবে। তাঁর সিলসিলার নাম হবে ওয়াইসীয়া ত্বরিকা। তুমিই হবে তাঁর পীর ও মুর্শিদ সে যুগের সর্বশেষ উচ্চশ্রেণীর দরবেশ হবে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *